বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত(1964-1975)

আজকেরে এই পোষ্টে বাংলাদেশের এক অবিসাংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হবে। যারা বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়তে চান তারা সম্পূর্ন পোষ্টটি পড়ুন আশা করছি তার জীবনী সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। বাঙ্গালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্মরনীয় হয়ে আছে তিনি বাংলাদেশের অবিসাংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান

বঙ্গবন্ধুর জীবনী রচনা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয়। বঙ্গবন্ধূ শেখ মুজিবর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম শেখ লুৎফার রহমান এব মাতা সাহেরা খাতুন।

দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন তৃতীয় সন্তান। বঙ্গবন্ধুর শৈশবের দিনগুলো কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায়। তিনি গিমাডাঙ্গা প্রইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন এবং ১৯৪১ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুল থেকে। তার ছাত্র বয়স থেকেই রাজনীতির প্রতি আগ্রহ ছিলো ।

হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে সংবর্ধনা শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে দাড়া করিয়ে জরাজীর্ন ছাত্রাবাস মেরামতের জন্য টাকা চাইলেন । তিনি সাহস দেখে খুশি হয়ে ছাত্রাবাস মেরামতের জন্য টাকা দিয়ে গেলেন ।

একবার তো তাদের গোলার সব ধান গ্রামের সকল গরীব চাষীদের মধ্যে বিলিয়ে দিলেন। সে এভাবে গরিবের বন্ধু ও নিপীড়িত মানুষে হৃদয় জয় করেন।

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবন ও রাজনীতি

কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে এইস এস সি ও ১৯৪৭ সালে বি এ পাস করেন। তিনি ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্র মুজিব ক্রমেই নেতা মুজিবে বিকশিত হতে থাকেন। ১৯৪৭ এ দেশ ভাগের পর আইন বিষয়ে পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালে মুসলিম ছাত্রলিগ গঠনে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করেন । ১৯৪৮ সালে তিনি সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সগ্যাম পরিষদে যোগদান করেন এবং ১৯৫২ এর ভাসা আন্দলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলীম লীগ গঠন করা হয় । এবং বঙ্গবন্ধু যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদ লাভ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন এই সময়টাই বঙ্গবন্ধুর জীবনীর গুরুত্বপূর্ণ সময়। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের সদ্যে পদ লাভ করেন এবং মন্তিসভার মন্তিত্ব লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙ্গালি জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা। এ সময়ে নিরাপত্তা আইনে তিনি তিন বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১৯৬৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কতৃক আয়োজিত রেসকোর্স মযদানে লক্ষ মানুষের এক নাগরিক সংবর্ধনায় তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয় ।

১৯৭০ সালে জাতীয় পষিদ নির্বাচনে তার  নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে । এই নির্বাচনে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে মোট আসন সংখ্যা ছিলো ৩০০ টি । জনসংখ্যার ভিত্তিতে মোট আসন সংখ্যা ছিলো ১৬৯ টি তার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর দল ১৬৭ টি আসনে জয়লাভ করে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় পরিষদে নিরষ্কুশ সংখ্রাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশিক পরিষদে ৩১০ টি আসনের মধ্য ২৯৮ টি আসনে জয় লাভ করে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মন জয় করেন।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান সরকার গঠন করতে না দিয়ে ১লা মার্চ থেকে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনিদিৃষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩রা মার্চ অসহযোগ আন্দলনের ডাক দেন। ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বৃহত্তম জনসভায় বঙ্গবন্ধু  স্বাধীনতার ঘোষনার আভাস দেন। এবং বলেন

বঙ্গবন্ধুর জীবনী

এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনি ২৫শে মার্চ মধ্য রাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙ্গালির উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং জঘন্য হত্বাকান্ড শুরুকরে। ২৬ এ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতান ঘোষনা দেন। ঘোষনার পরেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়। শুরু হয় মুক্তি যুদ্ধ। যুদ্ধ চলা কালে ১০ই এপ্রিল বঙ্গন্ধুর অবর্তমানে তাকে রাষ্টপতি করে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করার পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে । ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে।

১২ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন করেন এবং যুধ্ববিধ্বস্থ বাংলাদেশকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা ব্যাক্ত করেন। সকল বাধা দূর করে তিনি বাংলাদেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্রকারি ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিনত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারের সকলকে নির্মম ভাবে হত্যাকরা হয়। ১৫ই আগষ্টকে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো রাত হিসেবে ধরা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবনী শেষ হলেও তিনি আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন আজীবন।

যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা যমুনা, ততদিন রবে কৃর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধুর জীবনী

শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত

শেখ রাসেল  তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানের ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনে ১৯৬৪ সালে  ১৮ অক্টোবর, জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের ছোটছেলের নাম রাখেন রাসেল। এই নাম রাখার জন্য মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শৈশব থেকেই দুরন্ত চঞ্চল ও প্রাণবন্ত রাসেল ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের, সবথেকে বেশি আদর করতেন শেখ হাসিনা।

রাসেল জীবনের শুরু থেকেই পারিবারিক রাজনৈতিক মত ধারার জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাসেলের বয়স ছিলো সাত বছর। স্বাধীনতার পর এক ভদ্রমহিলাকে রাসেলের গৃহ শিক্ষীকা হিসেবে নিয়োগ করা হলো। রাসেলকে পড়ানো খুব একটা সহজ কাজ ছিলো না। শিক্ষীকাকে ওর কথাই শুনতে হতো। প্রতিদিন শিক্ষীকাকে দুটো করে মিষ্টি খেতেই হবে। আর শিক্ষীকা মিষ্টি না খেলে রাসেল পড়তে বসবে না। কাজেই শিক্ষিকাকে খেতেই হতো। কারন মানুষকে আপ্যায়ন করতে রাসেল খুবই পছন্দ করতো।

বঙ্গবন্ধুর পাঁচ ছেলে মেয়ের মধ্যে রাসেল ছিলো সব থেকে ছোট। অনন্য ভাই বোনেরা হলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য শেখ জামাল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ শেখ রেহানা।

শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত

শেখ রাসেলের সুখে শান্তিতে দিন কাটছিল তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাতা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালর সাথে রাসেল বড়ো হতে থাকলো এবং পড়ালেখা এবং খেলাধুলাই মনোযোগ দিতে থাকলো। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে দেশি-বিদেশি নেতাদের চক্রান্তে পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে শেখ রাসেলকেও নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। তখন রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

Leave a Comment